এটি বলিউডে সুবিদিত যে রানি মুখার্জি এবং জেড়তুতো বোন কাজোল পরস্পরকে বিন্দুমাত্র পছন্দ করেন না। কিন্তু এখন দুজনেই মা হয়েছেন, কাজেই কেউ আশা করতেই পারেন যে এবার তাঁরা খানিক পরিপক্কতা দেখাবেন এবং ব্যক্তিগত মেলামেশা না করলেও অন্তত একটি সামাজিক অনুষ্ঠানে একে অপরকে শুভেচ্ছা জানাবেন।
যাইহোক, কিছু লোক থাকে যারা বড় হতে চায় না এবং তাদের পুরোন ঝগড়া ভুলতেও চায় না - মনে হচ্ছে, কাজোল এবং রানীও সেরকমই। এটা পরিস্কারভাবে বোঝা গেল, যখন দিল্লীতে এইচ টি স্টাইল অ্যাওয়ার্ডস অনুষ্ঠানে কাজোল তাঁর স্বামী অজয় দেবগণের সাথে এলেন, যেখানে তিন বছর পর রানীও প্রকাশ্যে এসেছিলেন।
প্রকৃতপক্ষে, কাজোল এবং রানী একে অপরের কাছাকাছি বসে ছিলেন এবং যেমন ছবিতে দেখা যাচ্ছে, তাঁরা মাত্র এক ফুট দূরে ছিলেন, কিন্তু নিজের জেড়তুতো-খুড়তুতো বোন হওয়া সত্বেও কেউই ঘুরে কাউকে একবার হ্যালো পর্যন্ত বললেন না। অবশ্য, কাজোল ও অজয় গিয়ে রানীর টেবিলে বসা শাহীদ কাপুর, আলিয়া ভাট এবং সিদ্ধার্থ মালহোত্রাকে সম্ভাষণ জানালেন। হ্যাঁ, ঠিক তাই!
আরও দুঃখের এটাই যে সেখানে তানিশা রানীর কাছে গিয়ে ঊষ্ণ আলিঙ্গন করে এলেন। শুধু তাই নয়, যখন রানীর নাম "সর্বাপেক্ষা মহার্ঘ কেতাদুরস্ত মহিলা" রূপে ঘোষণা করা হল, ঠিক পেছনে থেকেও কাজোল একবার হাততালি পর্যন্ত দিলেন না।
যদি আমাদের কথা বিশ্বাস না হয়, গত সপ্তাহের ভাইরাল এই ভিডিওটি দেখুন।
প্রকাশিত খবর অনুযায়ী, কাজোলের সঙ্গে করণ জোহরের সাম্প্রতিক বিবাদও কাজোলের এমন ব্যবহারের হেতু হতে পারে কারণ, রানী বাস্তবিকই এই বিখ্যাত পরিচালকের খুবই ঘনিষ্ঠ। রানী তাঁর যমজ জোড়া সন্তানকেও সম্প্রতি দেখে এসেছেন।
এই বিবাদের সূত্রপাত হয় যখন অজয় দাবী করেন যে করণ তাঁর সিনেমা আ্যই দিল.... কে প্রোমোট করার জন্য কমল আর খানকে টাকা দিয়েছিলেন কারণ সেটি 'শিবায়' সিনেমাটির সঙ্গেই মুক্তি পাচ্ছিল। পুরো ঘটনাটিতে তিনি কতো দুঃখ পেয়েছিলেন, সে কথা করণ তাঁর বই দ্য আনস্যুটেবল বয় তে বর্ণনা করেছেন।
করণ এও বলেছিলেন যে, সমস্যা কখনোই কজোল ও তাঁর মধ্যে ছিল না। "তাঁর স্বামী এবং আমার মধ্যে যে সমস্যা ছিল, সে সম্পর্কে কেবল তিনি জানেন, সে জানে এবং আমি জানি। আমি এটাকে এভাবেই দেখতে চাই। আমি অনুভব করলাম যে যদি তিনি ২৫ বছরের বন্ধুত্ব স্বীকার করতে না চান, তিনি যদি তাঁর স্বামীকে সমর্থন করতে চান, সেটা তাঁর বিশেষাধিকার। কিছুটা বাহ্যিক ভাবে আমি এটা বুঝেছিলাম," তিনি তাঁর বইয়ে লিখেছেন।
তুতো বোনদের সাথে সুসম্পর্ক কেন অপরিহার্য ...
ভারত তার বিশাল যৌথ পরিবার গুলির জন্য পরিচিত এবং আমরা চিরকাল পারিবারিক বন্ধন এবং ভালবাসাকে গুরুত্ব দিয়ে এসেছি। আমাদের মনে আছে যে কোনও একটা পারিবারিক উৎসব বা জমায়েতে আমরা আমাদের তুতো ভাই-বোনদের সাথে কতো খেলেছি, কতো মজা করেছি।
- উৎসব মানেই তুতো ভাই-বোনদের সঙ্গে মজা করা।: উৎসব আরও মজার হয়ে উঠতয়ার বাচ্চারা শুধু যে আদানপ্রদান আর যত্ন করতেই শিখত তাই নয়, এতে করে তারা একটি পরিবার রূপে একসঙ্গে থাকার গুরুত্বও বুঝতে পারত।
- আপনার সন্তান একা নয় : এই সময়ের পরিপ্রেক্ষিতে এটি আরও গুরুত্বপূর্ণ এজন্য যে আঝকাল অধিকাংশ দম্পতি দ্বিতীয় সন্তান পেতে চান না। এই পরিস্থিতিতে জেড়তুতো খুড়তুতো ভাই বোনেরা আপনার সন্তানকে নিজের ভাই বোনের মতো স্নেহ ভালবাসা দিতে পারে।
- পুরুষানক্রমিক স্মৃতি ভান্ডার নির্মাণ : মা-বাবারা ভুলে যান যে সন্তানেরা আমাদেরকে অনুকরণ করে এবং যদি আপনি আপনার পরিবারের মধ্যে সুস্থ সুন্দর সম্পর্ক গড়ে তোলার চেষ্টা করেন, আপনার সন্তানও তাই করবে। কল্পনা করুন যে এভাবে আগামী প্রজন্মের জন্য কি অমূল্য স্মৃতি ভান্ডার নির্মিত হবে।
যদিও আমরা নিশ্চিত যে কাজোল ও রানী উভয়ই এই বিষয়ে চিন্তা করা উচিত ছিল, তবুও প্রকৃতপক্ষে তুতো বোন আপনার জীবনে একটি বিশেষ স্থান রাখে এবং সুখী পারিবারিক স্মৃতি তৈরিতে সহায়তা করে যা সারা জীবনের জন্য আপনার সাথে থাকে। এবং যেহেতু এখন তাঁদের উভয়েরই বাচ্চা আছে, তাঁদের আর একবার চেষ্টা করা উচিত যাতে সম্পর্ক আবার গড়ে তোলা যায়, কারণ সেটা বিশেষ ভাবে দরকার।