এক বছর আগে তাঁর সন্তান আদিরার জন্মের পর থেকেই রানী মুখার্জী অন্তরালে থাকছিলেন। কিন্তু মাস দুয়েক আগে যখন তাঁকে প্রকাশ্যে দেখা গেল, আমরা তাঁর ওজন কমা দেখে মুগ্ধ হয়েছিলাম।
রানীকে তখন বেশ কৃশকায়া, চোস্ত এবং সুন্দর আকারের দেখতে লেগেছিল, প্রকৃতপক্ষে, তাঁর নয়নাভিরাম পাতলা চেহারা নিয়ে তিনি নোতুন মা হওয়া মহিলাদের সন্তান জন্মের পর বেড়ে যাওয়া ওজনকে সহজভাবে গ্রহণ করে যথাসময়ে যে তা কমিয়ে ফেলা যায়, তার একটা দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছিলেন।
এবার বর্তমানে চলে আসুন যখন তিনি আর একবার গৌরী খানের দোকানে প্রকাশ্যে এলেন, মনে হল যে তিনি সেই ওজন আবার ফিরে পেয়েছেন।
যদিও তিনি খাটো পোশাকে সাদামাটা আত্মবিশ্বাসী ভাব দেখাতে চেয়েছেন কিন্তু এতে বিশেষ লাভ হয়নি, সবাই দেখেছে যে রানী আবার গোলগাল ওজন ফিরে পেয়েছেন।
A post shared by Instant Bollywood (@instantbollywood) on
হতে পারে যে রানী এখন ইয়ো-ইয়ো গোছের উল্টোপাল্টা খাদ্য-তালিকা মেনে চলছেন যার জন্য চক্রবৎ তাঁর ওজন একবার বাড়ছে আর একবার কমছে। ওজন অনেকটা কমে যাওয়া এবং খাওয়াদাওয়ার সতর্কতা শিথিল হলেই আবার তা বেড়ে যাওয়া সাধারণত দেখা যায় যখন কঠোর খাদ্যাভ্যাস দ্বারা ওজন কমাবার চেষ্টা করা হয়।
ওজন কমাবার জন্য এরকম কঠোর খাদ্য-তালিকা মেনে চলার পদ্ধতি সম্পর্কে কিন্তু পুষ্টি বিশেষজ্ঞরা বিরুদ্ধ মত জানিয়েছেন এবং তাঁদের পরামর্শ হল, স্বাস্থ্যকর খাবারের সঙ্গে পরিমিত ব্যায়ামই ওজন কমাবার স্বাস্থ্যকর উপায়।
A post shared by Gauri Khan (@gaurikhan) on
যদিও আমরা নিশ্চিতভাবে জানিনা যে সন্তান জন্মের পরবর্তী মেদ কমানোর জন্য রানী কঠোর খাদ্য-তালিকা মেনে চলেছিলেন নাকি জিমে ঘাম ঝরিয়েছিলেন কিন্তু যেভাবে তাঁর ওজন আবার বেড়ে গেছে, আমাদের মনে হয় যে নিজের স্বাস্থ্যবিধির প্রতি তাঁর সতর্ক নজর রাখা উচিত।
ইয়ো-ইয়ো ডায়েটিং কি?
ইয়ো-ইয়ো ডায়েটিং মানে একবার ওজন কমানো, তারপর আবার সেটা বাড়তে দেখা। এরকম নামকরণের কারণ যে ইয়ো-ইয়ো খেলনার একবার ওপরে আর একবার নীচে যাওয়ার সঙ্গে মানুষের এই ওজন বাড়া কমার বেশ মিল আছে।
এরকম ক্ষেত্রে একজন কঠোর খাদ্য-তালিকা মেনে চলা মানুষের ওজন কমে যায় কিন্তু কিছুদিন পর দেখা যায় যে সে আবার তার পুরোন ওজন ফিরে পেয়েছে। তখন আবার কম ওজনে সাফল্যকে ধরে রাখার জন্য সে আবার খাদ্য-তালিকা মেনে চলে এই চক্র চলতে থাকে।
কেন ইয়ো-ইয়ো ডায়েটিং এর বিরুদ্ধে পরামর্শ দেওয়া হয়
এতে সাধারণত ফল পাওয়া যায় তখনই, যখন একজন কঠোরভাবে খুবই কম খাবার খায় আর এর ফলে দর্শনীয়ভাবে ওজন কমে যায়। এই প্রাথমিক সাফল্য তাকে ওই চরম পদ্ধতি চালিয়ে যেতে উৎসাহিত করে।
কিন্তু শরীর যেহেতু এই কঠোর ব্যবস্থা দীর্ঘদিন সহ্য করতে পারেনা তাই যখনই সে আবার পুরোন খাদ্যাভ্যাসে ফিরে আসে তার ওজনও আবার ফিরে আসে।
বৈজ্ঞানিকভাবে ওজন কমানোর এই পদ্ধতিতে দেহের মাংসপেশী ও চর্বি, দুটোই কমে। এই ধরণের খাদ্য নিয়ন্ত্রণের ফলে আবেগজনিত প্রতিক্রিয়া হয় যাতে ব্যক্তিটির মেজাজ অস্থির হয় এমনকি হতাশার শিকার হয়।
ওজন কমাবার স্বাস্থ্যকর উপায়

খাবার বর্জন বা ওজন কমানোর পরিকল্পনার পরিবর্তে ওজন কমানোর সর্বোত্তম উপায় হচ্ছে পরিমিত শারীরিক শ্রমের সঙ্গে নিয়ন্ত্রিত স্বাস্থ্যকর খাবার খাওয়া। এখানে কিছু সোজাসাপটা পদ্ধতি দেওয়া হল, যাতে বিনা কঠোর খাদ্য-তালিকায় ওজন কমানো যায়।
- প্রতিটি ভোজন স্বাস্থ্যকর করুন : উপোস না করে প্রতিটি ভোজনকে অর্থপূর্ণ করার চেষ্টা করুন। আপনার খাবারের থালার দিকে তাকান আর দেখুন যে কোনগুলি আপনার শরীরের পক্ষে উপযোগী। প্রোটিনে পূর্ণ প্রাতঃরাস দিয়ে আপনার দিন শুরু করুন তারপর একটু বেলার দিকে হালকা কিছু খান, যাতে অন্তত একটা গোটা ফল বা একমুঠো বাদাম জাতীয় বীজ থাকে। প্রোসেসড ফুড খাবেন না আর যথেষ্ট জল খাবেন,
- প্রতিদিন এক ঘন্টা : স্বাস্থ্যসম্মত জীবনযাপন করতে হলে অন্তত এক ঘন্টা সক্রিয় শারীরিক ক্রিয়াকলাপ করতেই হবে। তাড়াতাড়ি হাঁটা, সিঁড়িতে ওঠা, স্কিপিং করা বা ট্রেডমিল করা, এর মধ্যে যেটা আপনার উপযোগী বলে মনে হবে সেটাই আপনার ওজন কমানোর সবচেয়ে ভাল উপায়।
- অসার ক্যালরি বর্জন : চিনিযুক্ত পানীয়, প্রোসেসড ফুড, ভাজাভুজি, জানালা দিয়ে ছুঁড়ে ফেলুন। যখন একবার আপনি পরিচ্ছন্ন খাবারে অভ্যস্ত হয়ে পড়বেন, তখন দেখবেন যে আপনি তৈলাক্ত খাবারের চেয়ে এইসব কাঁচা, তাজা খাবারের প্রতি তীব্র আকর্ষণ অনুভব করছেন।