কয়েকদিন আগে পুরনো বাবা সাইফ আলী খান তাঁর কন্যা সারা'র পেশা নির্বাচন নিয়ে আসন্তোষ প্রকাশ করেন। তিনি চান যে কলোম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের স্নাতক মেয়েটির অভিনেত্রী হবার বাসনা ত্যাগ করে নিউ ইয়র্কে কোনও চাকরি করা উচিত।
তিনি একটি সাক্ষাৎকারে বলেছেন, "সে তার জন্য কেন ওটা চাইবে? কোথায় সে পড়াশোনা করেছে সেটা দেখুন। সেটা করে ফেলার পর এটা না করে কেন সে নিউ ইয়র্কেই থেকে চাকরি করবে না? আমি অভিনয়ের পেশা কে খাটো করছি না, কিন্তু এটি মোটেই সুস্থির পেশা নয়। প্রত্যেকেই সবসময় ভয়ে ভয়ে থাকতে হয়। আর এ ব্যাপারেও কোনও নিশ্চয়তা নেই যে ভাল কাজ করলেই আপনি সফল হবেন। কোনও বাবা-মা তাদের সন্তানদের জন্য এরকম একটা জীবন কামনা করতে পারে না।"
সারা'র জন্য অমৃতা ও স্যাইফে লড়াই
যাই হোক, মনে হচ্ছে এ মন্তব্যটি সারা'র মা ও স্যাইফের প্রাক্তন স্ত্রী অমৃতা সিং এর একদমই ভাল লাগে নি। প্রকৃতপক্ষে, একটি বিনোদন পত্রিকা জানিয়েছে যে এই মন্তব্যটি দুই প্রাক্তনকে এক গুরুতর সংঘাতের দিকে নিয়ে গেছে।
সংবাদে প্রকাশ, ইন্ডাস্ট্রিতে সারা'র ভবিষ্যত সম্পর্কে স্যাইফের মন্তব্যে তাঁর প্রাক্তন স্ত্রী অমৃতা এতটাই অসন্তুষ্ট হয়েছিলেন যে তাঁকে ফোন করে কটুক্তি করেন।
"তিনি বলেন যে এরকম বলা খুবই দায়িত্বজ্ঞানহীণ, বিশেষতঃ যখন সারা তার পেশাতে সবেমাত্র পা দিতে চলেছে," সংবাদ সূত্রটি ঐ পত্রিকাকে জানিয়েছে। "স্যাইফ বাতবিতন্ডা এড়িয়ে গিয়ে অস্ফুট স্বরে বলেছেন যে তাঁর অন্য প্রসঙ্গের মন্তব্যকে ভুল ভাবে তুলে ধরা হয়েছে এবং প্রাক্তন স্ত্রীকে শান্ত করেছেন," ওই সূত্রটি আরও জানিয়েছে।
মজার ব্যাপার এটাই যে মা অমৃতা কিন্তু মেয়ের পেশা নির্বাচনে ও প্রথম আবির্ভাবের পরিকল্পনা নিয়ে খুবই খুশী এবং এমন কিছু হতে দিতে চান না যা ইন্ডাস্ট্রিতে তাঁর মেয়ের সফলতার পথে অন্তরায় হতে পারে।
অমৃতা এবং সারা'র সঙ্গে একমত হতে স্যাইফকে কি বাধ্য করা হয়েছে?
অভিযোগে বর্ণিত সংঘাতের কারণে স্যাইফ হাত গুটিয়ে নিতে (রূপকভাবে) বাধ্য হয়েছেন, মন্তব্য প্রত্যাহার করেছেন এবং সারা ও তাঁর প্রাক্তন স্ত্রীর সঙ্গে সহমত হয়েছেন।
ওই ফোনের পর একটি সম্মেলনে তাঁর 'আসল মন্তব্যের মানে' ব্যাখ্যা করে তিনিই তা প্রমাণ করেছেন।
"আমি আমার মেয়েকে ভালোবাসি, তাকে সমর্থন করি এবং আমি মনে করি তার পছন্দটি মহান। অবশ্যই, সে একজন অভিনেত্রী, সে মহান শিল্পীদের পরিবারের একজন, কিন্তু তবুও আমি তার জন্য একটু উদ্বিগ্ন কারণ এটি একটি অনিশ্চিত পেশা। যেহেতু আমি ওকে ভালোবাসি, সেইহেতু ওর জন্য উদ্বিগ্ন হই"। ব্যাস, এটুকুই আমি বলতে চাই। বুঝতে কোনও অসুবিধা? লোকেরা লিখছে যে 'তিনি জানেন না যে কি বলছেন, তিনি তাঁর মনকে জানেন না।' এসব আমার বিরক্তিকর মনে হয়," - তিনি ব্যাখ্যা করেছেন।
যাই হোক, মনে হচ্ছে তাদের কন্যার কর্মজীবন পছন্দ করা নিয়ে দুই প্রাক্তনের মতভেদ প্রকাশ্যে এসে পড়েছে। সময়ই বলবে যে তাঁর সন্তান (অমৃতার গর্ভে) সারা এবং ইব্রাহিম কে নিয়ে তাঁকে চুপ করে থাকতে হবে না কি তিনি প্রকাশ্যে তাঁর মতামত জানাতে পারবেন। এখনকার মতো এটা পরিষ্কার যে প্রাক্তন স্ত্রী অমৃতাই মালিক এবং তিনি যা ভাল মনে করছেন সেভাবেই তাঁর মেয়ের র্কমজীবন পরিচালনা করছেন।
আপনার বিয়ে ভেঙ্গে যাওয়ার পরে আপনার বাচ্চাদের কিভাবে সাহায্য করবেন!
প্রাক্তনদের মধ্যে এই যুদ্ধ একটি গুরুত্বপূর্ণ সামাজিক সমস্যাকে সামনে নিয়ে আসে, একটি তিক্ততাপূর্ণ বিচ্ছেদের পরে বাচ্চাদের কি অবস্থা হয়? বিশেষ করে যখন উভয় পক্ষই তাঁদের বাচ্চাদের জন্য আলাদা আলাদা্ কর্মজীবন পছন্দ করতে চান।
দিল্লী ভিত্তিক ক্লিনিক্যাল মনোবিজ্ঞানী অনুজা কাপুর ব্যাখ্যা করেছেন, "যা মা-বাবারা বুঝতে চান না, তা হল যে তাঁদের দুজনের মধ্যে সমস্যা থাকতে পারে কিন্তু সন্তানদের তো দুজনের সাথেই ভাল সম্পর্ক থাকে - এবং যখন পরিবার ভেঙে যায় তারা তা হারিয়ে ফেলে। মা-বাবার মধ্যে সর্বদা ঝগড়া হলেও, সেটার ক্ষতিকর প্রভাব মা-বাবার আলাদা হয়ে যাওয়ার থেকে কম।"
এরকম পরিস্থিতিতে, বিবাহ-বিচ্ছেদের পর ছেলেমেয়েদের সাহায্য করার জন্য বাবা-মায়েরা কি করতে পারেন তা এখানে দেওয়া হল :
- বিবাহ-বিচ্ছেদ অথবা স্বামী বা স্ত্রীর মৃত্যুর পর আবার ডেটিং শুরু করার আগে অন্তত দু-তিন বছর অপেক্ষা করুন।
- বিয়ে স্থির করার আগে দুবছর ডেটিং করুন, তারপর বিয়ের আগে তাদের বাচ্চাদের সাথে ডেটিং করুন।
- আগের পক্ষের পরিবারের সঙ্গে কেমন আচরণ করা উচিত, সেটা শিখুন।
- উপলব্ধি করুন যে পুনঃ বিবাহিত দম্পতিদের মধুচন্দ্রিমা যাত্রাপথের শেষে আসে, শুরুতে নয়।
- মনে করুন যে বাচ্চারা তোমার এবং আমার।
- পুরনো আনুগত্যগুলি্র প্রতি সংবেদনশীল হোন এবং সেগুলিকে সামলান।
- আশা করবেন না যে আপনার নোতুন সাথী আপনার সন্তানদের প্রতি আপনার মতোই অনুভূতিপ্রবণ হবেন।
- উপলব্ধি করুন যে পুনর্বিবাহের কিছু অনন্য প্রতিবন্ধকতা আছে।
- মা-বাবা একটি দলের মতো; আপনাদের পরিকল্পনা প্রস্তুত করুন।
Source: theindusparent