ডায়েটিং অনেক সময়ই কাজ করেনা কারন আমরা মনে রাখিনা যে হরমোনও আমাদের ওজন নিয়ন্ত্রণ করে
আপনি সব রকম চেষ্টা করেও ওজন কমাতে পারছেন না? এটা হতেই পারে, বিশেষত মহিলাদের ক্ষেত্রে। কারন মহিলাদের হরমোনাল চেঞ্জ হয় বেশি এবং বিপাক কম হবার সম্ভাবনা বেশি।
তাই মহিলাদের ক্ষেত্রে হরমোনের অসামঞ্জস্য ওজন বাড়াতে অনেকটাই দায়ি।
অনেক এনডোক্রিনোলজিস্ট এইরকমই মনে করেন। আমেরিকার বিখ্যাত এনডোক্রিনোলজিস্ট ডাক্তার স্কট আইসাক তার বই “হরমোনাল ব্যাল্যান্স” এ লিখেছেন যে ডায়েটিং অনেক সময়ই কাজ করেনা কারন আমরা মনে রাখিনা যে হরমোনও আমাদের ওজন নিয়ন্ত্রণ করে।
তাই আপনার যদি চেষ্টা সত্ত্বেও ওজন কমছে না, এই কতগুলি হরমোন টেস্ট অবিলম্বে করিয়ে নিন। আমাদের মতে এই ৬ টি নিশ্চয় করানো উচিত।
৬টি হরমোন টেস্ট যা আপনার করান উচিত যদি আপনার ওজন কমছে না
#১ থায়রয়েড
ইন্ডিয়ান থায়রয়েড সোসাইটি’র এক গবেষণা এটা জানিয়েছে যে প্রতি ১০ এ ১ ভারতীয় হাইপার থায়রয়েডে ভোগে (বেশি থায়রয়েড তৈরির ফলে হয়)। এই হাইপার থায়রয়েডই ওজন বাড়ায়।
আপনার যদি অবসাদে ভুগছেন, ওজন বাড়ছে, আপনার ত্বক যদি শুষ্ক এবং আপানর কন্সটিপেশান হচ্ছে - তাহলে আপনার নিশ্চয় এই টেস্ট করান উচিত। থায়রয়েড হরমোনই আপনার বিপাক কম করে দেয় এবং তার জন্যই ওজন বাড়ে।
#২ ইনসুলিন
ইনসুলিন হরমোনও ওজন নিয়ন্ত্রনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা আছে। এই হরমোন প্যানক্রিয়া তে বিটা সেল তৈরি করে যা শরীরে ফ্যাট ও কার্বোহায়দ্রেট নিয়ন্ত্রণ করে। তাই যদি আপনার ইনসুলিন বেড়ে গিয়ে থাকে আপনার ওজনও বাড়বে। তাই এই টেস্ট করিয়ে আপনি জানতে পারবেন যে আপনার সুগার বেড়েছে কিনা এবং আপনি তা কম করতে পারবেন।
আরও কি টেস্ট করানো উচিত জানার জন্য পরের পাতা পড়ু্ন
#৩ কোর্টিসোল
আরেকটা টেস্ট নিশ্চয় করানো উচিত তা কোর্টিসোল। এই হরমোনটি তৈরি হয় যখন আমরা ভিশন চিন্তায় থাকি বা ঠিক মত ঘুম না হলে। এই হরমোেনের পরিমাণ শরিরে বাড়লে ওজন বাড়ার সম্ভাবনা বেড়ে যায়, বিশেষত ভুঁড়ি হবার সম্ভাবনা বেড়ে যায়। আপনারা লক্ষ্য করে থাকবেন যে যে সব পুরুষ বেশি স্ট্রেসে বা ঘুম বঞ্চিত থাকেন তাঁদের আনেক সময়ই ভুঁড়ি হয়। এই হরমোনের অসামঞ্জস্য হলে খিদে না পেলেও খাবার ইচ্ছা বেশী হয়।
# ৪ ইস্ট্রজেন
স্ত্রী-হর্মোন ও অবাঞ্ছিত ওজোন বৃদ্ধির জন্য দায়ী। ময়াসিক চক্রের সময় ইস্ট্রজেন লেভেল কম হয়ে যায়, এটা শরীরে অবাঞ্ছিত ফ্যাট জমীয়ে রাখে। এছাড়া শরীরের ফ্যাট সেল গুলিতেও ইস্ট্রজেন থাকে এবং এরাও ক্যালরিকে ফ্যাট এ পরিবর্তিত করে।
ডাক্তার আইসাক বোঝালেণ যে, “ইস্ট্রজেন জীবনীশক্তি এবং ইনসুলিন প্রতিরোধ দু’টিরই উন্নতি ঘটাতে পারে।” গবেষণাতে এও জানা গেছে যে যে মহিলাদের ইস্ট্রজেনের পরিমাণ ঠিক, তাদের মাংসপেষী বেশী মজবুত এবং শরীরে মেদ কম।
#৫ প্রজেস্টেরন
মেনোপসের পর,শরীরে প্রজেস্টেরনের পরিমাণ কমে আসে, তাই জল প্রবাহ ও স্ফীতির সম্ভাবনা বেশি এবং তার জন্য শরীর ভারি মনে হয়। ডাক্তার শন টালবট তাঁর বই “দি কোর্টিসল কানেকশান” এ বলেছেন “কোর্টিসলের কাজ যেহেতু শরীরকে পুনরায় জালানী সরবরাহ করার জন্য উৎসাহিত করা তাই এই হরমোন সর্বদাই আপনার ক্ষুধা বাড়িয়ে রাখে”।
#৬ টেস্টোস্তেরোন
পলিসিস্তিক ওভারিয়ান সিন্ড্রোমএ মহিলাদের শরীরে টেস্টোস্তেরোনের পরিমাণ বেড়ে ওঠে। এটা পেশী ভর কম করে এবং ওজন বাড়িয়ে তোলে। শরীরে অনান্য পুরুষজাতিয় বৈশিষ্ট্যগুলিও দেখা যায়, যেমন গালে লোম, মাসিকের ঝামেলা, ত্বকের সমস্যা এবং কক্ষনও কক্ষনও বন্ধ্যাত্ব।
ডাক্তার মাল্কম কারুথারস তাঁর বই “টেস্টোস্তেরোন রেভলুইশান” এ লিখেছেন “ওজন বৃদ্ধি যা ডায়েট করেও কম করা যায়না তা বেশীরভাগ ক্ষেত্রেই এই হরমোনের গড়বরের জন্য হয়”।
Source: theindusparent