১। কেন তারা তাদের নিজস্ব বিছানায় ঘুমাতে চাইছে না, সেই কারণটি চিন্তা করে দেখুন
যদি আপনার বাচ্চাকে তার বিছানায় ঘুম পাড়াতে সমস্যা হচ্ছে, তাহলে প্রথমেই চিন্তা করুন যে তার অসুবিধেটা ঠিক কোথায়।
শিশুরা কখনও অন্ধকারকে ভয় পায়, কখনও বা রাতের বেলায় কোলাহল শুনলে তারা ভয় পায়, আবার কখনও মাঝরাতে জেগে গিয়ে আবার ঘুমিয়ে পড়তে ভীষণ সমস্যার সম্মুখীন হয়।
এটা অনুসন্ধান করে খুঁজে বের করুন যে অসুবিধেটা ঠিক কোথায়। তাহলেই আপনি তাদের সেই উদ্বেগ দূর করার উপায় খুঁজে পাবেন, যাতে তারা তাদের বিছানাতেই নিশ্চিন্তে ঘুমাতে পারে।
২। এটি নিয়মিত করুন
আপনার সন্তান যাতে নিজের বিছানাতে অনায়াসে ঘুমিয়ে পড়ে এ ব্যাপারে তাদের সাহায্য করার একটি ভাল উপায় হল যে এটি একটি রুটিনের মতো নিয়মিত করে যাওয়া যাতে তারা তাদের নিজেদের বিছানায় ঘুমাতে অভ্যস্ত হয়ে যায়।
রাত্রের খাওয়াদাওয়ার পর, তাদেরকে ঘন্টাখানেক খেলতে দিতে পারেন, এবং তারপর উষ্ণ স্নান করাবার সময় নির্ধারণ করুন। স্নানের ঠিক পরের সময়টি গল্প শোনাবার এবং এই সঙ্গে তাদের এক গ্লাস দুধ খেতে দিন যাতে তারা শান্ত এবং নিরুদ্বেগ হয়ে যায় আর তারপর আপনি তাদের ঘুম পাড়াতে পারেন।

একটি রুটিন তৈরি করে সেটি কঠোরভাবে পালন করে গেলে তা আপনার সন্তানের জন্য একটি ধাঁচা তৈরি করতে সাহায্য করবে, এবং এর ফলে সহজেই তারা নিজের জায়গায় ঘুমিয়ে পড়বে। তারা যেন নিরাপদ বোধ করে এবং ব্যাবস্থাটি যেন তাদের আরামদায়ক মনে হয়, এ ব্যাপারটা নিশ্চিত করুন, যাতে একা একটি কামরায় থাকতে তাদের মনে কোনও ভয় বা উদ্বেগ না থাকে।
৩। তাদেরকে নিজে থেকে শান্ত থাকতে শেখান
স্বয়ং-শান্ত হল এমন একটি উপায়, যাতে আপনার বাচ্চারা আপনাকে ছাড়াই নিজে নিজে ঘুমিয়ে পড়বে। আপনার সন্তানকে স্বয়ং-শান্ত থাকা শেখানো খুবই গুরুত্বপূর্ণ, যাতে তারা আপনার সাহায্য ছাড়াই
সুন্দরভাবে ঘুমিয়ে পড়তে পারে।
যত তাড়াতাড়ি আপনি আপনার সন্তানকে স্বতঃস্ফূর্তভাবে স্বয়ং-শান্ত থাকা শেখাতে পারবেন, যত তাড়াতাড়ি তারা কোনও সমস্যা ছাড়াই তাদের নিজের ঘরে নিজের বিছানায় ঘুমাতে সক্ষম হবে।
৪। ইতিবাচক হতে হবে
অবশ্য অনেক সময়ই আপনার বাচ্চা একা ঘুমানোর ব্যাপারটা সহজে রপ্ত না করতেও পারে, বিশেষত যদি তারা আপনার পাশটিতে শুয়ে ঘুমাতে অভ্যস্ত হয়ে গিয়ে থাকে।
সে জন্য শিশুদের সঙ্গে মা-বাবার ব্যবহার নিতিবাচক না হয়ে ইতিবাচক হওয়া খুবই গুরুত্বপূর্ণ, যাতে ঘুমাতে আসার সময় তাঁদের বাচ্চারা স্বচ্ছন্দ থাকতে পারে। নেতিবাচক ব্যবহার বা শাসানির ফলে ব্যাপারটা খুবই খারাপ পরিণতির দিকে চলে যেতে পারে, কাজেই আপনার বাচ্চাকে নিজের বিছানায় ঘুমাতে শেখানোর সময় এ ধরণের ব্যবহার বর্জন করাই সর্বোত্তম।
৫। এটি সময়সাপেক্ষ
আর সবকিছুর মতো আপনার সন্তানকে একা ঘুমানো শেখাতেও কিছুটা সময় তো লাগবেই। ব্যাপারটা এত সহজ নয় যে আপনি শেখালেন, আর হয়ে গেল। প্রথমে বাচ্চাকে তার শোবার পরিবেশ এবং একা ঘুমিয়ে পড়া -- এই দুটির সঙ্গে মানিয়ে নিতে হবে।
সময় নিন, বাচ্চার সঙ্গে তাড়াহুড়ো করবেন না, বিশেষ করে যখন আপনি দেখছেন যে তারা এখনও ঠিক প্রস্তুত নয়।
৬। অধ্যবসায়ই চাবিকাঠি
হাল না ছেড়ে দেওয়াটাই গুরুত্বপূর্ণ, এমনকি যদি আপনার সন্তানদের তাদের নিজের জায়গায় ঘুম পাড়াতে গিয়ে প্রচন্ড অসুবিধে হয়, তবুও না। বিভিন্ন শিশুদের ব্যক্তিত্ব আলাদা আলাদা, তাই যা অন্যদের কাজ করে তা আপনার সন্তানের ক্ষেত্রে না করতেও পারে।
শুধু মনে রাখবেন যে অবিচল থাকতে হবে এবং মনে রাখবেন যে এ কাজ আপনি আপনার সন্তানের জন্য করছেন, আপনার নিজের জন্য নয়। সব শেষে, আপনাকে একটি দীর্ঘমেয়াদী সমাধান বার করতে হবে, ক্ষণস্থায়ী কিছু নয়।